চলে গেলেন বেহালার সমাজসেবী প্রবীর দত্ত

 চিরনিদ্রায় বেহালার সমাজ সেবক প্রবীর দত্ত 



বিশেষ সংবাদদাতা , কলকাতা , ২৪ ফেব্রুয়ারিঃ  এমন অনেক মানুষ আছেন , যারা নীরবে , নিভৃতে মানুষের পাশে দাড়ান বিপদের সঙ্কটজনক মুহূর্তে। এরকমই একজন মানুষকে হারালো বেহালাবাসী। প্রবীর দত্ত , পেশায় একজন ব্যাঙ্ক চাকুরে ছিলেন। ছোট বেলা থেকেই মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে , তাঁকে যে কোন বিপদ থেকে উদ্ধার করার ব্রতটাই ছিল তারা ধ্যান ও জ্ঞ্যান। পরে যখন তিনি অর্থ উপার্জন করতে থাকেন , তখন এই বিষয়টাই নেশার মত পেয়ে বসে তাঁকে। এরপর একসময়ে তার চাকরি জীবন শেষ হয় । আর অবসর জীবনটাকে উপভোগ করতে থাকেন সমাজ সেবায়। কোন মেধাবী দুস্থঃ ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করতে পারছে না , সেখানে গিয়ে পাশে দাঁড়ানো , কেউ অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা করাতে পারছেন না ,পাশে আছেন প্রবীর দত্ত।করোনার সময়ে ভয় ডর উপেক্ষা করে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন তিনি। এমনকি একের পর এক ঝড় যখন লন্ডভন্ড করে দিচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগণাকে , তিনি নিঃশব্দে ত্রাণ নিয়ে পৌছে গেছেন তাদের কাছে । একটি হাসপাতাল বেহালার শিবরামপুরে গড়ে তুললেন দুস্থঃ মানুষদের জন্য । বেহালায় সমবায় আন্দোলনের নতুন ধারা তার হাত ধরেই , আবার ছোটদের জন্য সেই মৌমাছির আদর্শে মনিমেলার পাশে থেকে মনিভাই হয়ে আমৃত্যু ছিলেন পাশে । আবার ফুটবলের উন্নতিতে বেহালার শৈলেন মান্না ফুটবল একাডেমীর ভাইস চেয়ারম্যানের পদে থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পালন করে গেছেন নিজের কর্তব্য ।  প্রবীর দত্তকে নিয়ে যতই বলা যায় যেন শেষ হতে চায় না। এলাকার বহু সমাজ সেবী সংগঠনের প্রাণপুরুষ ছিলেন তিনি । প্রচারবিমুখ এই মানুষটি চলে গেলেন চিরদিনের জন্য , না ফেরার দেশে । 

আজ সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে জীবনাবসান হয় প্রবীর দত্তের। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। কয়েক মাস আগে তার স্ত্রী  বিয়োগ হয় । তারপর থেকেই মানসিক ভাবে একটু ভেঙ্গে পড়েছিলেন প্রবীর বাবু। বিষয়টি পারিবারিক সুত্রে জানা যায়। এলাকার মানুষের একটি কথাই প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল শেষ যাত্রায় , বেহালা তার বড়দা ( সবাই এই নামেই ডাকতো ) নামক ছাতা বা অভিভাবককে হারালো।  

মন্তব্যসমূহ