দু' টাকার ফেরিওয়ালা , নিঃসহায়দের কাছে নতুন পোশাক নিয়ে হাঁসি ফোটাতে হাজির
কুশল দাশগুপ্ত , শিলিগুড়ি , ৪ অক্টোবরঃ দু টাকায় নিজের ৫বছরের নাতনির জন্য টুকটুকে লাল রঙ এর ফ্রক কিনে যারপরনাই খুশি গোপাল দাস নামে প্রবীন এক রিকশাচালক। তিনি জলভরা চোখে বলেন, তার নাতনি তাকে বলেছে আজ তার জন্য পুজোর জামা কিনে যেতে। কিন্তু এখন আর লোকে সেভাবে রিকশায় চড়ে না। তাই সকাল থেকে রিকশা চালিয়ে ৫০ টাকাও রোজগার হয়নি। ভাবছিলাম কিভাবে নাতনির ইচ্ছে পূরন করব। আর আমার এই চিন্তা দূর করে দিল দু টাকার ফেরিওয়ালারা। দুই টাকায় কিনে নিয়েছি নাতনির জন্য লাল ফ্রক। আজ নাতনি খুব খুশি হবে ।
গরীব রিকশাওয়ালা দাদুর কাছ থেকে এই দুটাকার ফেরিওয়ালারা আসলে ফেরিওয়ালা নন, এরা সকলেই শিলিগুড়ি ইউনিক সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্য। এই সোসাইটিই পুজোর মুখে দুঃস্থ সাধারন মানুষের জন্য নিয়ে এসেছে দুটাকার বিনিময়ে নতুন বস্ত্র সম্ভার। সংস্থার সভাপতি রাকেশ দত্ত বলেন, গত বছরও তারা একইভাবে শিলিগুড়িতে ৫ টাকার বিনিময়ে পুজোর সময় বস্ত্র বিক্রি করেছেন। করোনার কারণে অনেক দুঃস্থ মানুষের রোজগার কমে গিয়েছে। অনেকেই পুজোয় জামাকাপড় কেনার সামর্থ হারিয়েছেন
যেন এক অভিনব উদ্যোগ। পুজোর মুখে সাধারন মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে নতুন বস্ত্র সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছে দু টাকার ফেরিওয়ালা। করোনার কারণে এবছর এই ফেরিওয়ালারা বিশেষ ছাড় দিচ্ছে বস্ত্র সম্ভারে। গত বছর যেই পোশাক দুঃস্থ মানুষজনকে কিনতে হয়েছে ৫ টাকার বিনিময়ে। এবছর সেই দামে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে। মাত্র ২ টাকায় শহরে পোশাক বিক্রি করছেন এই দু টাকার ফেরিওয়ালারা। সোমবার শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কের সামনে দেখা গেল এই ফেরিওয়ালাদের। নীল পোশাক পড়ে কতিপয় যুবক যুবতীরা আবাল বৃদ্ধ বনিতাদের কাছে বিক্রি আর পুজোর মুখে দুটাকায় নতুন পোশাক কেনার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে গেল দুঃস্থ মানুষজনদের মধ্যে। ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে পোশাক কেনার লাইনে দাড়িয়েও তারা একে অপরের কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ছেন সত্যিই কি দুটাকায় এরা পোশাক দিচ্ছেন? পরে অবশ্য দুটাকার ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে পছন্দের নতুন বস্ত্র পেয়ে দুহাত ভরে আশির্বাদ করছেন বিক্রেতাদের।
এই করোনা অতিমারির কারণে অনেকেই হারিয়েছেন কর্ম , জীবিকার সংস্থান , সামান্য খাবারটুকে যগাড় করেই কোন রকমে বেঁচে আছে তারা । তাদের কথা মাথায় রেখেই এবছরও তারা নতুন পোশাক বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন। আর সেই সঙ্গে দিয়েছেন কেনাকাটায় বিশেষ ছাড়। যেকোন পোশাকের দাম ধার্য করা হয়েছে মাত্র ২ টাকায়। যাতে সাধারন দুঃস্থ মানুষরা দান মনে না করেন সেই কারণে সবাইকে পোশাক কিনতে হচ্ছে ২ টাকার বিনিময়ে। প্রথম দিন তারা ৩০০ জনের কাছে পোশাক বিক্রি করেছেন। পুজো পর্যন্ত চলবে তাদের দু টাকার ফেরিওয়ালার স্টল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন