উত্তরবঙ্গের কালীপূজোর জুয়ার আসর নিয়ে সরব সংস্কৃতি প্রেমীরা

 কালীপুজোয় উত্তরবঙ্গে জুয়ার আসরে সর্বস্বান্ত হয় বহু পরিবার , উদাসীন প্রশাসন, অভিযোগ সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংস্কৃতি প্রেমীরা 



নিজস্ব সংবাদদাতা , ময়নাগুড়ি , ৩০ অক্টোবর : কালীপুজো আসলে জুয়ার আসর বসানো ময়নাগুড়িতে এখন ট্রেন্ড হয়ে গেছে । পুজোর প্রায় দশ দিন আগে থেকেই শহর ও গ্রাম গঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় জুয়ার আসর বসানো শুরু হয়ে গেছে । আর সেই জুয়ার আসরে আসক্ত হয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়ছে বহু পরিবার । অনেক পরিবারে অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে জুয়া । বিশেষ করে যুবসমাজ জুয়াতে বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে বলে অভিজ্ঞ মহলের অভিমত । শহর ও গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় দিন ও রাতের যেকোনো সময় প্রকাশ্যে বসছে জুয়ার আসর । জুয়ার পরিচালনাকারী ও আসর সম্বন্ধে সবজান্তা পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে । তবে ময়নাগুড়ি থানার আইসি তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দেন।

         কালীপুজো নয় ময়নাগুড়ির আনাচে কানাচে সবপুজোতে এমনকি সারাবছরই চলে জুয়ার আসর । অনেক পুজোর উদ্যোক্তারা জুয়ার আসর বসিয়ে গান ও মেলার আয়োজন করেন । অভিযোগ পুলিশের মদতে এইসব কাজ হয় । জুয়ার পাশাপাশি মদের ঠেকগুলিও রমরমিয়ে চলে । সাধারণ মানুষ ও যুবসমাজের পকেট খালি করে লক্ষ লক্ষ টাকা লুটে নিয়ে যায় জুয়ার বোর্ড ও মদের ঠেকগুলি । অনেকে পরিবারের জমানো টাকা , কেউ ব্যবসার টাকা , কেই বাড়ির গয়না বিক্রি ও বন্ধকের টাকা , আবার কেউ সাইকেল , বাইক ও মোবাইল ফোন বিক্রি করে জুয়ায় সর্বস্বান্ত হয়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়ি ফেরেন । শুরু হয় পারিবারিক অশান্তি । অনেকে ক্ষতি স্বীকার করতে না পেরে পারিবারিক অশান্তির জেরে আত্মহত্যার পথ পর্যন্ত বেছে নেয় । এইভাবে জুয়া ও মদের ঠেকে ক্ষতি হয় যুবসমাজ ও অনেক পরিবারের । যা বর্তমান ময়নাগুড়ির বুকে শহরে ও গ্রামে গঞ্জে রমরমিয়ে চলছে । নষ্ট হচ্ছে ময়নাগুড়ির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য । তাই যুবসমাজের মঙ্গলের জন্য ও একটি সুষ্ঠু পরিবেশ গঠনের জন্য জুয়া বন্ধ আবশ্যক বলে মনে করছেন ময়নাগুড়ির সর্বস্তরের সচেতন নাগরিকরা ।

      ময়নাগুড়ির সংস্কৃতিপ্রেমী অলোক দত্ত বলেন , ' ময়নাগুড়ি সংস্কৃতির একটা পীঠস্থান এবং ময়নাগুড়ির একটা ঐতিহ্য আছে । ময়নাগুড়ির চারদিকে যুবসমাজ যেভাবে জুয়া ও নেশার মধ্যে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে তা বড় বিপজ্জনক । আমরা ময়নাগুড়ির নাগরিক সমাজ পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি দেখার জন্য আবেদন করছি ।' ময়নাগুড়ির প্রবীণ নাগরিক ধীরেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ বলেন , ' জুয়ায় মূল্যবান যুবসমাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । আমি মনে করি যে সব জায়গায় জুয়ার আসর বসে সেখানে পুলিশ যদি ঘন ঘন অভিযান চালায় তাহলে এগুলো বন্ধ হয়ে যাবে এছাড়া আমাদের সচেতন সমাজ শিক্ষিত সমাজ গণ্যমান্য ব্যক্তি রাজনৈতিক ব্যক্তি সকলেই যদি জুয়াকে ঘৃণা করি এবং আমাদের যুব সমাজকে এ বিষয়ে সচেতন করি তাহলে জুয়া বন্ধ হতে পারে ।'ময়নাগুড়ি ১-নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মনোজ রায় বলেন , ' আমাদের ময়নাগুড়িতে কালি পুজোতে প্রথাগতভাবে জুয়াখেলার একটা বিষয় চলে আসে । জুয়া অনেক পরিবারকে নষ্ট করে ফেলে , অনেকে আত্মহত্যা পর্যন্ত করে । এর বিরুদ্ধে ময়নাগুড়ি পুলিশ প্রশাসন নজরদারি চালাচ্ছে । তবে ময়নাগুড়ি আমাদের সকলকে এই বিষয়ে সতর্ক বিরত থাকতে হবে । কেবলমাত্র পুলিশের উপর নির্ভর করলে চলবে না ।'

এই বিষয়ে ময়নাগুড়ি থানার আইসি তমাল দাস বলেন, " বিষয়টি আমার নলেজে নেই। কেউ যদি খবর দেয় তাহলে অভিযান করা হবে।"

মন্তব্যসমূহ