সকাল সকাল ফেসবুক খুলেই দেখি মদের গেলাস হাতে সুন্দরী। মনে হলো দিনটা ভালো যাবে। দেবীদর্শন।
জয় মা কালী কলকাত্তাওয়ালি!
বাঙালিমাত্রই তো দেবীপূজারি। কিন্তু ফেসবুক সুরাসুন্দরীতে দেবীদর্শন কি সেই অতিভক্তি 'ইয়ের' লক্ষণ? মোটেই না। একটু পুরাণের পাতা ওল্টান। ছবিটা 'পষ্ট' হবে।
সুরার দেবী বারুণী। বিষ্ণুপুরাণ সাক্ষী। দেব দৈত্যের সমুদ্রমন্থনে উঠে আসেন বারুণী। কিন্তু সুরায় 'না' দৈত্যকুলের। বারুণীকে ঘরে তুলতে নারাজ। অগত্যা, বারুণী যান দেবতাদের ভাগে। সেই থেকেই সুরাহীন দৈত্যকুল হলো অসুর। আর সুরা প্রাপ্তিতে দেবতারা হলেন সুর। অতএব, হাতে সুরার গেলাস ফেসবুক সুরাসুন্দরীতে, দেবীদর্শন হলে আপত্তির কি আছে?
দেবদেবীরাই মদ খায়।
অসুররা মদ খায় না।
তাহলে বঙ্গসমাজই বা উদার হবে না কেন?
হয়েছেও তাই। সুরাপানে বঙ্গসমাজ আজ এতটাই উদার, সুরাপানে 'না' মানেই সব একেকটা অসুরের স্যাম্পল। প্রাচীন সনাতনপন্থী। আর সুরাপানে সুন্দরীরা একেকজন দেবী। ভক্তদের স্তুতি আরাধনায় পরম গর্বিত।
ফেসবুকের দেওয়ালে ঘুরে বেড়ায় উড়ে বেড়ায় পেগ হাতে সুন্দরীর ছবি। সেইসব সুন্দরী যারা স্বর্গে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় বীরবিক্রমে, বাক্যবাণে লড়াই চালাচ্ছেন অর্ধেক আকাশ দখলের। হয়তো বা, জেহাদ পুরুষতেন্ত্রর বিরুদ্ধে। তারই প্রথম ধাপে দেবের হাতের পেগ ছিনতাই হয়ে দেবীর হাতে। তবে মদে অরুচি মানেই প্রাচীনপন্থী ধারনাটা জ্ঞানের ঘরে আকাল বশত। একেবারে নির্জলা ভুল।
ওসব পুরাণ ফুরাণে যাচ্ছি না। দেবদেবীর কথাতেও যাচ্ছি না। সময়ের কালচক্রে শুধু একটু পিছিয়ে যাই।
- ভট্টাচার্য মহাশয়, সুরাপানে কি পাপ হয়?
- ইহাতে পাপ হয় যে বলে, তাহার পাপ হয়।
বাবুর সঙ্গে ভরচাজ মশায়ের এই বার্তালাপ ছাপা হয়েছিল 'সমাচার দর্পণ' পত্রিকায়। সাল ১৮২১। অঙ্ক কষলে সময়টা দাঁড়ায় ঠিক দুশো বছর আগে। কথাবার্তাতেই স্পষ্ট, সেসময়েই শুরু হয়ে গেছিলো
বাংলার মদ গেলা। সন তারিখের হিসেবে সময়টাকে প্রাচীন বলা যেতে পারে বৈকি। অগত্যা যারা মদের গেলাস হাতে, আধুনিক সাজার লড়াই চালাচ্ছেন তাঁরাই প্রাচীনের দলে।
আরও মজার গল্প আছে। তাহলে প্রাচীনাদের বয়সের গাছপাথর থাকবে না। তবে তাদের চরিত্রে আরোপ হবে দেবত্ব।
বিষ্ণুপুরাণে যেমন বারুণীদেবী আছেন, বৈদিক দেবতাকূলে ছিলেন সোম। ওই সোম থেকেই সোমরস। কপাল খারাপ সোমদেবের। দেবকুলে সেই 'হাইপ'টা পেয়ে কুলীন হতে পারলেন না।
ঠিক আজকের মধ্যবিত্ত বাঙালির মতোই, সোমরস হোক বা সাদা বাংলায় মদ, দেবতারাও সোমদেবের দিকে টেঁড়া চোখে তাকালেন। অতঃপর এক চালাকির রাস্তা নিলেন দেবতারা। কোল্ডড্রিঙ্কের বোতলে মদ মিশিয়ে খাওয়ার মতো। বন্দোবস্ত করা হলো দুই দেবের 'মার্জার'- এর। অতঃপর নিজের নাম খুইয়ে চন্দ্রদেবেই বিলয় হলেন সোমদেব।
তবে এই মার্জার কাহিনী যিনিই ফাঁদুন, তারজন্য কমপক্ষে 'থ্রি চিয়ার্স' বলতেই হয়। অসাধারণ কাব্যিক কল্পনা। চলতি ভাষায় একদম খাপে খাপ। চাঁদনি রাত আর সোমরস মিলেমিশে একাকার। ঠিক আজকের সুরাসুন্দরীদের মতোই।
সেদিন সেই সোমরসেরই জয়জয়কার।
ইউনিভার্সিটির পড়ুয়ারা তুফান তুললেন মদের গেলাসে। 'ইয়ং বেঙ্গল'- এর নামাবলি গায়ে এক কুসংস্কারহীন সমাজ গড়তে চিয়ার্স করে নেমে পড়লো একদল নবীন। সুরারসের প্রেরণায় তাঁরা উন্নীত হয়ে সমকক্ষ হতে চাইলেন দেবরূপী স্রষ্টার।
ওই দলে শুধু এলেবেলেরাই ছিলো মনে করলে ভুল হবে। রাজনারায়ণ বসু, ভূদেবচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, মধুসূদন দত্তের মতো ডিরোজিয়ান ভবিষ্যতের সেরা বাঙালিরাও ছিলেন। কলকাতা মাতলো নব্য বাবু কালচারে। ঠিক আজকের মতোই বটতলায় ছাপা নকশা 'কলির রাজ্যশাসন'- এ হরিপ্রসাদ মুখুজ্যেমশাই লিখলেন- কলির আজ্ঞায় সুরাদেবী কালাপানি পেরিয়ে গোরাদের বশ করেন। তারপর সেই নেশা এসে পড়ে টাউন কলকাতায়।
সুরাপ্রেমে কলকাতা হাবুডুবু।
সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ভদ্রাসনে বসছে মদের আসর। আসরে হাজির দরদী কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, দীনবন্ধু মিত্রের মতো বড়োমাপের মানুষরা। 'নীলকর' নাটক লিখে যিনি রাতারাতি বাংলা মাতিয়েছিলেন সেই দীনবন্ধু মিত্র।
যাঁর নাটক, গানে বাঙালি মুগ্ধ, সেই দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের বাড়িতেও জমজমাট মদের আসর। একহাতে অমরগীতির কলি বাঁধেন, আরেক হাতে সুরাভর্তি গেলাস তোলেন। আর সবাইকে ছাপিয়ে গেলেন বাংলার কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। মদের ঘোরেই লিখে ফেললেন বাংলার অলটাইম হিট 'দেবদাস'। শুধু বাংলা না, ভারতের সিনেমায় রিমেকের ইতিহাসে 'দেবদাস'ই এক নাম্বারে।
ওদিকে তখন বাংলা নাট্যমঞ্চ কাঁপাচ্ছেন গিরিশচন্দ্র ঘোষ। মঞ্চের নিবেদিত প্রাণ। তবে পেটে মদের কিক চাই। তবেই মাথা খোলতাই। তিনি নিজে ভাসতেন সুরারসে। বাংলাকে ভাসাতেন নাট্যরসে।
গিরিশ ঘোষের এই পাগলামি দেখে ঠাকুর পরমহংসদেব প্রশ্রয়ের সুরে বলতেন, 'ওর ভোগও আছে যোগও আছে।' ভক্ত গিরিশের মধ্যে যেন ভৈরব দর্শণ করতেন ঠাকুর।
একইরকমভাবে মদের ওপর ঘোর আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মধুসূদন দত্তের মধ্যে এক সৃষ্টিশীল মানুষকে খুঁজে পেতেন বিদ্যাসাগর। সেই নিষ্ঠাবান বিদ্যাসাগরকে মাইকেল লিখছেন- 'আমার সহকর্মী বাবু মূর্তিলাল চৌধুরীকে নিয়ে তোমার কাছে যাব। এক বোতল শেরি আনিয়ে রেখো।'
আবার হিসেবি সুরারসিকও ছিলেন। এক পেগ মদ হাতে তুলেই অন্য হাতে একটি টাকা বার করে টেবিলে রাখতেন। টাকার অঙ্ক দেখে বুঝতে পারতেন ঠিক ক'পেগ পেটে গেলো। এভাবেই নিজের মদের নেশায় লাগাম টেনে রাখতেন রাজা রামমোহন রায়।
আবার ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তর মতো ট্র্যাজেডির নায়ককে দেখুন। সেযুগের তথাকথিত প্রগতিশীল ব্যাপার- স্যাপার একেবারেই মেনে নিতেই পারতেন না। প্রাচীনপন্থী এক কবি, সাংবাদিক মানুষ। কিন্তু মদ্যপানের বিরুদ্ধে কলম চালাতে পারলেন না। একটাই কারণ, মদ না হলে চলতো না।
কলকাতা যখন মদের জোয়ারে ভাসছে ঠিক তখনই কলম ধরলেন দুই প্যারী। পত্র- পত্রিকায় মদ্যপদের কড়া ভাষায় সমালোচনা করতে লাগলেন প্যাঁরীচাঁদ মিত্র, প্যাঁরীচরণ সরকার। ওদিকে প্রথম জীবনে সুরাপ্রেমী আন্দোলনের এক হোতা রাজনারায়ণ বসু আচমকাই উল্টো সুর গাইলেন। তাঁর কর্মস্থল মেদিনীপুরে বসে, ১৮৬০ সাল নাগাদ তৈরি করে বসলেন 'সুরা নিবারণী সভা'। মদ্যপরা খেপে লাল। দিলেন ম্যাজিসেট্রটের এজলাসে নালিশ ঠুকে। রাজনারায়ণ বসুর এই অনাসৃষ্টি কাণ্ড চলবে না। মেদিনীপুরের সেই ঢেউ কলকাতায় পৌঁছলো বছর তিনেক পরে। যেই ভাবা সেই কাজ। 'বঙ্গীয় সুরা নিবারণী সভা' প্রতিষ্ঠা করলেন প্যাঁরীচরণ সরকার।
সুরাপানের অভ্যাস ছাড়ার এক অদ্ভুত তত্ত্ব তাঁর 'বিষবৃক্ষ'- এর নায়ক দেবেন্দ্রকে দিয়ে বলিয়ে নিলেন সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
- 'যদি স্ত্রীর মৃত্যুসংবাদ শুনি তাহা হইলে মদ ছাড়িবো।'
আজ এমন ডায়লগ শোনা গেলে 'অর্ধেক আকাশ'- এর শেয়ার হোল্ডাররা খোদ বঙ্কিমচন্দ্রকেও রেয়াত করতেন না। কাঠগড়ায় তুলেই ছাড়তেন।
আর তুলবেনই বা না কেন? মদ কী এমনই অস্পৃশ্য নাকি? বিষ্ণুপুরাণ, বৈদিক শাস্ত্রমতে সুরা সোমরসতো দেবতার প্রসাদ।
- 'সুরাপান করিনে মা
সুধা খাই জয় কালী বলে!'
খোদ সাধককবি রামপ্রসাদের রচনা। সুরা সুধা কালীভক্তির ককটেল। গানটা মনে ধরেছিল শ্রীরামকৃষ্ণেরও। মদের নেশায় চুর গিরিশ ঘোষকে দেখলেই ওই গানের সুর ধরতেন তিনি।
মদের জন্য জিভ ছোঁকছোঁক করতো গেরস্থ কুলবধুদেরও। মফস্বল, গ্রামগঞ্জে কালীকে মানত করা হতো কালো পাঁঠা আর মদ। মানত সফল হলেই বসতো মেয়েদের মদ মাংসের ভোজসভা। পুরুষ বলতে পুরোহিতমশাই। পেতলের বাটিতে মদ ঢেলে দিতেন যজমানদের। বৃদ্ধারাও মদের বাটি তুলে নিতেন। লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথের বড়দা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী জ্ঞানদানন্দিনী।
তবু মদ নিয়ে বাঙালির সঙ্কোচ কাটলো না। দেবত্বকে পাশ কাটিয়ে যেন অসুরত্বর দিকেই ঝুঁকে পড়লো। শোলের গব্বর সিংকে দেখে খৈনির নেশা ধরেছিল সত্তর দশকের ইয়ং বেঙ্গল। ঠিক তেমনই উন্নিশ শতকের বাঙালির মদ্যপানে দীক্ষা হয়েছিলো গোরাসাহেবদের কাছে। কিন্তু সেইসঙ্গে আরেকটা জিনিসও শিখে ফেলেছিল বাঙালি- ভিক্টোরীয় নীতিবোধ। আর ওই নীতিবোধ থেকেই মদের বিরোধিতা। বঙ্কিমচন্দ্রের 'লোকরহস্য' গ্রন্থের নিবন্ধ 'দাম্পত্য দণ্ডবিধির আইন'- এ গৃহবধূ দাবি জানালেন, বাড়িতে মদ্যপান দণ্ডযোগ্য অপরাধ।
তাই হয়তো প্রথম জীবনের মদে আসক্তি, অনেক গুণীজনই কাটিয়ে উঠেছিলেন পরবর্তী জীবনে। এমনকি সূচনা করেছিলেন সুরাবিরোধী আন্দোলনেরও।
পরাধীন ভারতে তখন স্বদেশিয়ানার ঝড় উঠেছে। কালীপ্রসন্ন সিংহের রচনায় দেখা গেল- 'মদ খাওয়া বড় দায়।' মদের দোকানের সামনে নিত্যদিন পিকেটিং। স্বাধীনতার পরেও সেই ঝড়ের রেশ ছিলো। তবে উন্নিশ শতকের শেষভাগের বিশ্বায়ন ঝড়ে উড়ে গেলো স্বদেশিয়ানার সেই ঝড়ের শেষ আবেগটুকুও। নারীপুরুষের 'চিয়ার্স'। পূর্ণ দেবত্বপ্রাপ্ত আসমুদ্র হিমাচল বৈদিকভূমের।
মদ্যপানে লিঙ্গভেদ ঘুচিয়ে সাবালিকা হলো বাংলা। আর অর্ধেক আকাশ না, এবার গোটা আকাশ সাজলো সুরার ঘনঘটায়।
তবে সেইসঙ্গে তার সুপ্রাচীন কৌলিন্য খুইয়ে, সাম্যবাদী চেহারা নিলো মদ। ধনী গরিব, বড় মেজ সেজ সবরকম বিত্তবানের হাতে উঠলো সুরার পেয়ালা।
আজ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল আছে। ভিক্টোরিয়া নেই। সেই ভিক্টোরিয়ান নীতিবোধও নেই। ভিক্টোরিয়ার স্মৃতির মতোই প্রায় বিলীন হয়ে গেছে রাজকীয় ভিক্টোরিয়ান নীতি নৈতিকতা।
উন্নিশ শতকের বাঙালির সুরাসক্তির সেই ধারাকেই এগিয়ে নিয়ে গেছিলেন আজকের বিদগ্ধ সমাজের ঋত্বিক ঘটক, শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের মতো গুণীজনরা। আবার তাঁদের দেখেই গেলাস হাতে তুলে গর্বিত বোধ করেছেন উঠতি ভক্তরা। মনে মনে তাঁরাও একেকজন হয়ে উঠেছেন ঋত্বিক, শক্তি। ভবিষ্যতদ্রষ্টা সেই মহাপুরুষ, কবিগুরু এঁদের জন্যই হয়তো লিখে রেখে গেছিলেন-
'কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা
মনে মনে......'
'ওই বইটা একেবারে মাতাল হইয়া বোতল খাইয়া লেখা।' সেই বইটাই হয়ে গেলো বাংলার ক্লাসিক। খোদ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, তাঁর বন্ধু প্রমথনাথ ভট্টাচার্যকে এক চিঠিতে নিজেই ফাঁস করে দিয়েছিলেন দেবদাসের সৃষ্টিরহস্য।
'মেঘনাদবধ কাব্য'র মতো আর একখানা কাব্য লিখতে পারলে, সেই লেখককেও মদ খাওয়াতে রাজি ছিলেন বিদ্যাসাগর।
উৎপল দত্তকে নিয়েও এরকম এক মজার ঘটনা শোনা যায়। ঘটনার প্রমাণ দেওয়ার অবশ্য উপায় নেই। নাটক শেষে তিনি গ্লাস সাজিয়ে বসেছেন। এক উৎসাহী দর্শক উঁকি মেরে বললো- দেখ, মদ খেতে বসেছে।
সেই দর্শককে ডাকলেন উৎপল দত্ত। জানতে চাইলেন- নাটক কেমন লাগলো?
- দারুণ।
- নাটক লিখেছে কে?
- আপনি।
- পরিচালক কে?
- আপনি।
- নাটকে অভিনয় করেছে কে?
- আপনি।
- নাটক লিখবো আমি, পরিচালনা করবো আমি, অভিনয়ও করবো আমি। তাহলে মদ খাবেটা কে, আমি না আপনি?
উৎপল দত্তের ওই প্রশ্নের মুখে পড়ে সেই উৎসাহী দর্শকের হাল বুঝতেই পারছেন।
সেকাল হোক আর একাল, সব গুণীজনের জয়ধ্বনি দিয়ে একথা বলাই যায়- 'জাতে মাতাল তালে ঠিক'।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন