রবিবাসরীয় সাহিত্যের দিন প্রতিদিন

রবিবাসরীয় ছোট গল্প  

ছোট গল্পের একেবারে নবীন বলা চলবে না, অথচ সৃষ্টির দিক দিয়ে প্রবীনা বললেও অত্যুক্তি হবে না। মোনালিসা লেখেন মনের ভিতরের রাখা অনুভুতি দিয়ে। তাঁর এক অসামান্য অনুভুতির প্রকাশ আজকের লেখায় 


 দিল্লি চলো







মোনালিসা মুখোপাধ্যায়

জীবনে সবারই কিছু অভিজ্ঞতা আছে  যা ভোলার নয়। আমারও আছে। কিছু বোকা বোকা অভিজ্ঞতা। 


তখন ক্লাস সেভেন। দিল্লী যাচ্ছি বাবা মার সাথে বেড়াতে।খুব ভালো কথা। রাজধানী এক্সপ্রেস ছাড়লো প্রথম চাপা ওরকম ট্রেনে। গোল গোল চোখ ঘুরছে আমার। মা বলেছিল ভেতরে বুঝবি না, বাথরুমে গেলে  বোঝা যাবে কত জোরে ছুটছে ট্রেন।

ট্রেন খানিকটা যেতেই মা কে ধরলাম,  চলো বাথরুম দেখবো কত জোর যাচ্ছে ট্রেন।বায়না প্রচুর আমার চিরকাল আর জেদ। মা নিয়ে গেলো। আগে মা যাচ্ছে পিছনে আমি গিয়ে গতিবেগ পরীক্ষা করে দেখতে হবে। 

 দোলনার মত দোল খেয়ে ডিগবাজি খেতে খেতে বেঁচে মাযের বকা খেয়ে সিটে ফিরছি। এমন সময় 

সামনে এবার পুশ পুল দরজা। প্রথম পরিচয়।  যাবার সময় মা আগে ছিলো বেশ আনন্দে গেছি। এবার আমি আগে ড্যাম স্মার্ট। পুলকিত হয়ে পুল করলাম এবং ভিতরে এলাম। ঠিক তারপরেই একটা পিঠে সজোরে ধাক্কা আর নিজেদের সিট ছেড়ে সেই ধাক্কায় তিনটে সিট এগিয়ে দাঁড়ালাম। ভয়ে ভয়ে পিছন ফিরে দেখি মা কটমট করে তাকিয়ে।আসলে পুল করেই হাফ ঢুকে ছেড়ে দিয়েছি তাই দরজা নিউটনের সূত্রে আমায় অতোটা জোরে ঠেলে দিয়েছে। যাইহোক তারপর ভালোমানুষ হয়ে ছিলাম অনেকক্ষণ। ফালতু ঝামেলায় পড়লাম ডিনার টাইমে  এলে।

সামনের সিটের সাথে টেবিল ফিট করা । ক্লিপ খুলে নামিয়ে নিলাম। কী আনন্দ। মাথায় নেই যে আমার পরের জনের টেবিলও আমার সিটে ফিট করা। তখন স্যুপ এসেছে গরম গরম। দু চামচ খেয়ে হঠাৎ  মনে হলো দেখি তো সিটের পাশে হাতল টা কীসের?  যেই ভাবা সেই কাজ। 

চাপ দিতেই হাতলে সিট পিছনে কাত খানিকটা। আর আমার পিছনের সিটের অচেনা কাকুর কোলে একবাটি স্যুপ যথারীতি উল্টে গেলো। তারপর মাযের চড় আর ওই কাকুর "ছোড় দিজিয়ে বহেনজী বাচ্চি হ্যায়।" আর ছাড়ে মা - কয়েক ঘা খেয়ে কেঁদে কেটে ঘুমোলাম 


সকালেএগারোটাতে দিল্লি।বাকী রাস্তা সুবোধ বালিকা হয়েছিলাম। 


তবে হ্যাঁ দিল্লি যাওয়া সোজা কথা নয় এটা বুঝেছিলাম।


মন্তব্যসমূহ