দিন প্রতিদিন বিশেষ

 নারী শক্তি বিশেষ 

 নিম্ন বিত্ত পরিবারের মেয়ে, শালিনীর আই পি এস হয়ে ওঠা , সিনেমার নয় বাস্তবের গল্প 


সোমা মুখোপাধ্যায় , কলকাতা 

বাস কন্ডাক্টরের মেয়ে থেকে পুলিশের উচ্চ পদস্থ অফিসার তথা আইপিএস হয়ে ওঠা শালিনী অগ্নিহোত্রীর নামে আজ অপরাধীরা কাঁপে। হিমাচল প্রদেশের মেয়ের আইপিএস  হয়ে ওঠার পেছনের গল্পটিও প্রতিটি নারীকে শক্তি জোগাবে। 

ছোটবেলায় একদিন শালিনী অগ্নিহোত্রি তার মায়ের সঙ্গে  একটি বাসে করে যাবার সময় যে সিটে তিনি বসেছিলেন তার পাশেই একজন লোক দাড়িয়েছিলেন। লোকটি বারবার তাঁর সিটের হ্যান্ডেলটি ধর ছিলেন। এ নিয়ে তাঁর সমস্যা হচ্ছিল। 

তিনি লোকটিকে বেশ কয়েকবার তার হাতটিকে সরাতে বলেছিলেন, কিন্তু লোকটি তাঁর কথা শোনেন নি।  উল্টে লোকটি শালিনী অগ্নিহোত্রীকে বলেছিলেন   আপনি কি ডিসি যে আপনার আদেশ অনুসরণ করতে হবে? শালিনী তখন বেশ কম বয়সী ছিলেন এবং ডিসি কী তা জানতেন না। তবে এটি অবশ্যই একটি বড় এবং শক্তিশালী পোস্ট সেটা বুঝেছিলেন। সেদিন থেকে শালিনী স্বপ্ন দেখতেন বড়ো পুলিশ অফিসার হবার। 

হিমাচল প্রদেশের উনা জেলার থাথাল গ্রামের বাসিন্দা শালিনী অগ্নিহোত্রীর। জীবনে এই ঘটনার পরে পরিবর্তন ঘটেছিল। তিনি ইউপিএসসির প্রস্তুতি শুরু করেন। শালিনীর বাবা রমেশ বাসের কন্ডাক্টর এবং মা গৃহিণী ছিলেন । খুব স্বাভাবিক পরিবারের মেয়ে ছিলেন  শালিনী। সারা জীবন কঠোর পরিশ্রম করে ইউপিএসসিতে সাফল হন। ছোট শহরের মেয়ে শালিনী কোনও কোচিং নেননি বা কোনও বড় শহরেও যাননি। তাঁর কঠোর পরিশ্রম দিয়ে তিনি ইউপিএসসিতে 285 তম র‌্যাঙ্ক অর্জন করেছেন এবং ভারতীয় পুলিশ পরিষেবা বেছে নিয়েছেন। এখন তিনি দেশের সফল  আইপিএস অফিসারদের মধ্যে গণ্য হন। তাঁর নাম শুনে অপরাধীরা কাঁপে।

শালিনীর পরিবারে বাবা-মা ছাড়াও বড় বোন রজনী, যিনি একজন ডাক্তার এবং ভাই আশিষ, যিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে আছেন। শালিনীর ভাই আশীষও তাঁর মতো পড়াশোনায় খুব স্মার্ট ছিলেন এবং তিনি এনডিএ টেস্টে প্রথম স্থানেই ক্লিয়ার করেছিলেন।



তাঁর ব্যাচের সেরা অলরাউন্ডার প্রশিক্ষণার্থী হওয়ার পরে শালিনী প্রধানমন্ত্রীর ব্যাটন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিভলবারের সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন। তিনি সেরা অলরাউন্ডার মহিলা অফিসার প্রশিক্ষণার্থী এবং আউটডোর বিষয়ে সেরা মহিলা অফিসার প্রশিক্ষণ প্রাপ্তির জন্য একটি পুরষ্কারও পেয়েছিলেন। তিনি তদন্তের জন্য একটি ট্রফি এবং 'সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং জাতীয় সংহতি' শীর্ষক সেরা রচনা লেখার জন্য পুরস্কার  পেয়েছিলেন।

প্রাথমিকভাবে সিমলায় সহকারী পুলিশ  সুপার হিসাবে নিযুক্ত হন। শালিনী অগ্নিহোত্রী পরে হিমাচল প্রদেশের কুল্লু জেলায় পুলিশ সুপার হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন। বর্তমানে ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসারের পোস্টিং হয়েছে শালিনী অগ্নিহোত্রীর। তিনি জীবনসঙ্গী হিসেবে এক আইপিএস অফিসারকেই বেছে নিয়েছেন।

মন্তব্যসমূহ