দিন প্রতিদিন বিশেষ

বর্তমানে আমরা নিজেরটা ছাড়া কিছুই বুঝি না। যদি বলেন ব্যাক্তিস্বার্থ ঠিক আছে, যদি বলেন , আপনি বাঁচলে বাপের নাম , তাও ঠিক আছে। আর এই নিজেরটা বুঝতে গেলে প্রথমেই প্রমাণ করতে হবে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব। অরিন্দম দত্ত রায়ের লেখনীর বলিষ্ঠতায় লুকিয়ে আছে এক সুক্ষ্ম প্রতিবাদ। আপনাদের কেমন লাগলো লিখে পাঠান কমেন্ট বক্সে । 




আমি শুধু আমি   

অরিন্দম দত্ত রায়

আচ্ছা,  মানুষ সবচেয়ে কাকে বেশী ভালোবাসে???        কেন, নিজেকে। 
       অস্বীকার করার উপায় নেই।আয়না সামনে পেলেই নিজেকে একবার দেখে নেওয়ার লোভ এর জন্যেই সামলাতে পারেনা মানুষ। হয়তো দু একবার মুখ ভেঙ্গিয়ে নেয়। দেখে নেয় মুখ ভেঙ্গালে সেটা ঠিক কিউট হচ্ছে কিনা। ছাড়ান দেন এসব। অন্য কথায় আসি।
                প্রেমিক - প্রেমিকা। দুজনের প্রেমে মানে ভালোবাসায় গদ গদ দুজন। কিন্তু শ্রেষ্টত্বের লড়াইয়ে কেউ এক ইঞ্চি জমি ছাড়বেনা  আই মিন প্রেমের রিংয়েও নিজের পজিশানে ফিক্সট থাকবে প্রানপনে। মনোপুতঃ হলো না কথাটা। দাড়ান মশাই। একটু ব্যাখা দিয়ে নি। তারপর নাহয় গালি বর্ষন। প্রথমতঃ এই যে তেড়েফুড়ে আসছিলেন সেটা আপনার প্রেমের ভালোবাসার শ্রেষ্টত্বের পেছনে পিন মারলাম বলেই না? যেমন , প্রেমিকের ভাবখানা এরকম যে , পৃথিবীতে আমিই একমাত্র লোক যে তোমায় শ্রেষ্ট ভালোবাসাটা দিচ্ছে। আমার ভালোবাসাটাই শ্রেষ্ট। এর উচ্চতার ধারে পাশে কেউ নেই। প্রেমিকার ভাবনা,...আমিই একমাত্র মেয়ে যে এই উচ্চতায় ভালোবাসতে পারে। আর সব বোগাস। যাও গিয়ে হেঁদি পেঁচি নুরজাহান স্যালমান্ডারের পরখ করে  এসো আমার মালটাই (ভালোবাসা ও স্যাক্রিফাইস) বাজারে সবচেয়ে ভালো। না না শুধু প্রেমিক প্রেমিকা কেন,  বাবা মা, ছেলে মেয়ে, ভাইবোন, মায় এমনকি বন্ধুবান্ধব,পার্টির নেতা কর্মী, জনগন ,  মন্ত্রী সান্ত্রী, পুলিশ ,মিলিটারী, উদারমনস্ক, সামাজতান্ত্রিক, দক্ষিনপন্থি, ফ্যাসিস্ট, হগ্গলে হগ্গলে ঐ এক কথা  আমারটাই শ্রেষ্ট ।  আমাগোটাই হগ্গলের থ্যানে সুইন্দর....। কারন আমরা নিজেকে সবচেয়ে বেশী ভালোবাসি। আসলে আমরা যে যেটা অর্জন করতে বা বলা ভালো যে যেটা সহজেই করতে পারি সেটাই তার কাছে শ্রেষ্ট। অন্যদের কাছে সেটা আমরা বারবার প্রমান করতে চাই। ব্রাহ্মন বললো আমি শ্রেষ্ট । কামার বললো আমি। কুমোর বললো আমি আছি। মালিক বা শ্রমিকের একই দাবী। মোল্লা আর টিকিধারী একই জায়গায়। আসলে সবাইতো নিজেকে ভালোবাসে। এই ভালোবাসার স্বার্থে জোটবাঁধাটা এক দুই তিন করে বাড়তে বাড়তে আমি,বংশ, গোষ্ঠী পেরিয়ে দেশ জাতি পৌছায়। 

            ভাবছেন এবার কি কথা।  এটাই বেদ বাক্য।  সারা পৃথিবী জুড়ে দেশ ও জাতি গুলোর দিকে দেখেন কি রেশারেশী। এক ধাপ নামেন দ্যাশের রাজনৈতিক মোল্লাদের (দল গুলি) দেখেন।  একই হিসাবের ফর্দ। দোষ আমাদের। ঐ শ্রেষ্টত্ব। ক্ষমতা লাভ। আর ক্ষমতা লাভ মানেই জনগনের মাথায় টুইস্ট আর নেপোর দই....।
আমারা নিজেদের সবচেয়ে বেশী ভালোবাসি আর শ্রেষ্ট মনে করি। শ্রেষ্টত্ব যখন ক্ষমতা দখলের শেষ কথা। তখন চলুকনা ভাই ক্ষমতা দখলের লড়াই। খুনোখুনি হোক। হোক পেশাই। গরম কড়াইয়ে ফোটানো। নয়তো হালার রস নিংড়াইয়া গুড় কি কইরা হইবো। তবে কত্তা দুইখান কথা । পেটাপেটি করেন। কাউরে নিচু কয়েননা। কে জানে কখন কে ক্ষমতা পায় তখন আবার বাঁচনের ল্যাইগ্যা তার কাছে হাত কচলাইয়া হে হে কইরা দাঁত কেলাইতে হইবোতো....তখন কত ছোটো হইতে হইবো আপনাকে....।
       অবশ্য 'নীতিহীনতা' শব্দটা এখন যুদ্ধ আর প্রেমের পাশে রাজনীতিতে সমান ভাবে জায়গা করে নিয়েছে। 
   লজ্যাও নাই।  
    ঘৃনাও নাই। 
       সব চলেবল...

মন্তব্যসমূহ